রহিম ও কামাল দুই বন্ধু। গল্পের এক পর্যায়ে রহিম বললো, “দেখ বন্ধু আগের দিনগুলো কী সুন্দর ছিলো! সংসারের মোহে পড়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করেই যাচ্ছি। কিন্তু কী পেলাম! ভেবেছিলাম ছেলেমেয়ে বড় হলে আরাম পাবো। এখন সবাই যার যার, তার তার।” বন্ধু কামাল বললো, "অত ভেবনা, যত ভাববে ততো বেশি কষ্ট পাবে। বরং তোমার যা করার তুমি তা করে যাও। অন্যের কল্যাণ চিন্তা করো। তুমি চিরকাল থাকবে না, তোমার কর্ম থাকবে। এমন কিছু করো যাতে তুমি চলে গেলেও মানুষ তোমাকে মনে রাখে।"
মশার কামড়ে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠলে চেয়ারম্যান সাহেব তার খাস লোকদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন। চেয়ারম্যানের ডান হাত হিসেবে পরিচিত আকিব সাহেব বললেন, এটি কোনো ব্যাপারই না। সন্ধ্যাবেলা ব্যাপকহারে ধূয়া দিলেই সব মশা মরে যাবে। তার পরামর্শে সমস্ত এলাকা ধূয়ায় অন্ধকার করা হলো। কিন্তু কোনো সুফল পাওয়া গেল না। এমনি আরো কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়ে ব্যর্থ হয়ে আকিব সাহেব বললেন, পৃথিবীর ভারসাম্যের জন্য মশারও দরকার আছে। রক্ত না খেলে তারা বাঁচবে কী করে। এ সময় মহিলা দর্জি তাবাসসুম বলল, আমি একটা জিনিস তৈরি করে দিচ্ছি, যার ভিতরে থাকলে মশা কামড়াতে পারবে না। সবার অনুরোধে তিনি মশারি তৈরি করে দিলেন।
রাস্তার মোড়ে পাশাপাশি দুইজন ভিখারী সকাল থেকেই সাহায্যের অপেক্ষায় বসে থাকে। প্রতিদিন অফিসের উদ্দেশ্যে যাওয়ার সময় মনির উদ্দীন পালাক্রমে দু'জনকেই সাহায্য করে। এ ঘটনা পাশের দোকানদার মিন্টু প্রতিদিন দেখে। একদিন মিন্টু মনির উদ্দীনকে বলেন, "আপনি নিয়মিত দু'জন ভিখারীকে সাহায্য করেন। আপনি কি জানেন তারা প্রকৃত অভাবী নয়। তাছাড়া একজন ভিন্ন ধর্মের।" জবাবে মনীর উদ্দীন বলেন, "আমি কোনো ধর্ম, বর্ণ হিসেবে দেখি না, আল্লার সুষ্টি মানুষ হিসেবে দেখি। আল্লাহ সকলের সম্পদের সাথে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল গরীবের হক রেখেছেন। আমি সেটা দেওয়ার চেষ্টা করি।
৯ম শ্রেণির এক ছাত্র রহমানকে চিনতে না পেরে ঢুকতে দেয় না মাদ্রাসার নতুন গেটম্যান। রহমান বলে, "আমাকে প্রিন্সিপাল স্যার চেনেন। চেনে শিক্ষার্থীরাও। এই মাদ্রাসায় আমি ক্লাস ওয়ান থেকে পড়ে আসছি। এই মাঠে কত খেলেছি। এই মাঠের ঘাস আমাকে চেনে। পিয়ন আযাবুলকে ডাক, সেও অস্বীকার করবে না। এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি ধূলিকণার সাথে আমার সম্পর্ক আছে। এই মাদ্রাসা আমার প্রাণ।"
এলাকার কিছু বখাটে ছেলে প্রায়ই জোর করে চাঁদা আদায় করে রহিমুদ্দীর বাড়ি গিয়ে। তারা কখনো ভাংচুর করে, কখনো মুত্যুর হুমকিও দেয়। সহজ সরল রহিমুদ্দী আর সহ্য করতে পারে না। সে কুড়াল হাতে নিয়ে হুংকার দেয়, "কিছু বলি না বলে দুর্বল মনে করেছিস। একাত্তরে রক্ত দিয়েছি, আর এবার, হয় মারবো, নয় মরবো।” কুড়ালের আঘাতে একজনের মাথা ফেটে যায়, বাকিরা পালিয়ে বাঁচে।